আমরা অনেকেই মনে করি উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপের দেশ মানেই ইংল্যান্ড অথবা জার্মানি। তাদের ধারণা একেবারে মিথ্যা বলা যাবে না, তবে কিছুটা সনাতন। আমাদের জেনে রাখা উচিত, ইউরোপের অন্যতম প্রধান দেশ ইতালিতেও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য এখন বিস্তর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী ইতালিতে আসছেন উচ্চশিক্ষার জন্য। তারা মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে পড়াশোনা করেন। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলেও ছাত্রছাত্রী আসছেন, তবে তাদের সংখ্যা তুলনামূলক কম। উচ্চশিক্ষার এই শুরুতে বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরাও আছেন। গত বছর প্রায় ১০০ জন ছাত্রছাত্রী বাংলাদেশ থেকে এসেছেন ইতালির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে।
মজার বিষয় হচ্ছে, এদের কেউই নিজ খরচে পড়ছেন না। সবারই ছোটবড় স্কলারশিপ বা শিক্ষাবৃত্তি আছে।
ইতালিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে যেসব বিষয় বেশি লোভনীয়, তা হলো ইকোনমিকস, লোকাল ডেভেলপমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, কেমিস্ট্রি, সিনেমা অটোগ্রাফি, পলিমার সায়েন্স, পরিবেশ বিজ্ঞান ইত্যাদি। বিশেষ করে অর্থনীতির জন্য ভেনিসের কাফোসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ ইউরোপের সেরা। তাছাড়া আর্কিটেকচার, মেডিসিন সায়েন্স, ইনভায়রনমেন্ট সায়েন্স, ফ্যাশন, ইভেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে ইতালির অবস্থান অনেক দেশের শীর্ষে।
বিশ্ব জব মার্কেটেও ইতালীয় ডিগ্রির চাহিদা উন্নত অন্যান্য দেশের মতোই। বরং কোনো কোনো বিষয়ের চাহিদায় এগিয়ে আছে ইতালি। রোম বিশ্ববিদ্যালয়, ভেনিস বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রেনতো বিশ্ববিদ্যালয়, তরিনো বিশ্ববিদ্যালয়, মিলানোর পলিটেনিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ ইতালির অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব সাবজেক্টসহ উঁচু মানের শিক্ষা প্রোগ্রাম চালু আছে যা ইউরোপের অনেক দেশের শিক্ষা প্রোগ্রাম থেকে উন্নত ও মানসম্পন্ন।
ইংলিশ মিডিয়াম চালু হওয়ায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন খুবই লোভনীয়। বিশেষ করে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স লেভেলে ইতালিতে পড়াশোনার সুযোগ। বিশ্ববিদ্যায়গুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে এশিয়ান শিক্ষার্থীদের প্রচুর সুযোগ দিচ্ছে।
গত কয়েক বছর থেকে ইতালির প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংলিশ মিডিয়াম চালু করা হয়েছে। সুতরাং পড়াশোনার ক্ষেত্রে ইতালীয় ভাষা না জানলে কোনোভাবেই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না। তারপরও যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ আছে সেসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিনা খরচে ৩ মাসের ইতালীয় ভাষা শেখার কোর্স করার সুযোগ আছে।
ইচ্ছে করলে ছাত্রছাত্রীরা সে কোর্স করে নিতে পারে। কারণ লেখাপড়ার জন্য দরকার না হলেও অন্যান্য প্রয়োজনে ইতালীয় ভাষা দরকার হয়। যেমন বাজার করা, সোশ্যাল গ্যাদারিং বা সোশ্যাল রিলেশন ইত্যাদি।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং গ্র্যাজুয়েট লেভেলে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য গত বছর থেকে ইতালীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দ্বার প্রায় উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। শুধু আইএলটিএস এবং কিছু সহজ শর্তে পড়তে আসতে পারেন শিক্ষার্থীরা। ভর্তির আবেদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা করে তথ্য দেয়া আছে। কেউ যদি নিজেকে যোগ্য মনে করেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেইল ঠিকানায় মেইল করে যোগাযোগ বা দরকারি তথ্য জানতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও তথ্য জানা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময়ে করণীয় বিষয়ক নির্দেশনা জানাবে। ইউরোপের অন্যান্য যে কোনো দেশের তুলনায় ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি অনেক কম।
খুব অল্প খরচে এখানে থাকা এবং পড়াশোনা করা যায়। অর্থনৈতিক অসুবিধায় থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাজের সুযোগ করে দেয়া হয়। ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। বিদেশ থেকে পড়তে আসা প্রায় সব শিক্ষার্থীর জন্যই ছোট-বড় কোনো না কোনো শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়।
বিশেষ করে যাদের বার্ষিক আয় ২০ হাজার ইউরোর নিচে তাদের জন্য আবাসন এবং শিক্ষাকালীন খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তবে এর জন্য আবেদন করতে হয়। শুধু ছাত্রছাত্রীরা নয়, নিম্ন আয়ের সাধারণ অভিবাসীরাও এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।
এখানে সরকারি এবং আঞ্চলিক স্কলারশিপ আছে। যে প্রফেসরের অধীনে পড়বেন তার কাছে অনেক রিসার্চ প্রজেক্ট থাকে, সময়মত যোগাযোগ করলে ৩ বছর খুব সহজে কাজ করা যায় এবং আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যায়, যা দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা খুব ভালোভাবে পরিবার নিয়ে থাকতে পারেন। আঞ্চলিক স্কলারশিপে আর্থিক অংকটা একটু কম, যা দিয়ে পরিবার নিয়ে থাকা কঠিন। কিন্তু একজন ছাত্র বা ছাত্রীর জন্য কোনো সমস্যা হয় না। ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের অন্য কোনো দেশে ইতালির মতো সহজ শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা নেই।
আঞ্চলিক স্কলারশিপ দেশে বসে পাওয়া যাবে না। ইতালির যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর স্থানীয় রিজিওনাল শিক্ষা অফিস ও সিজিআইএল অফিসে আবেদন করতে হবে। বার্ষিক আয় ২০ হাজার ইউরোর কম হলে খুব সহজেই এই স্কলারশিপটি পাওয়া যায়।
ইতালির প্রায় প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক স্কলারশিপ দেয়। এছাড়া তারা এক বেলা ‘ফ্রি’ খাওয়ার ব্যবস্থাও করে।
এর ফলে শিক্ষার্থীরা খরচ বাঁচিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। আর্থিক দিক থেকেও বাড়তি চাপ নিতে হয় না।
ইতালিতে যেসব দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসেন, তার মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে নগণ্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থী। প্রধান কারণ দুটি। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে সঠিক তথ্য না থাকা এবং ইতালীয় সরকারের সঙ্গে আমাদের দেশের সরকারি পর্যায়ে শিক্ষা বিষয়ক কোনো যোগাযোগ রক্ষা না করা। এ যাবত বাংলাদেশের যত ছাত্রছাত্রী ইতালিতে পড়তে এসেছেন তাদের প্রায় সবাই এসেছেন নিজ উদ্যোগে।
দ্রষ্টব্য এটি শুধুমাত্র প্রকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য যারা সত্যিই বিদেশ থেকে বিদেশে পড়াশোনা করতে আগ্রহী। আবেদনকারীরা দৃঢ়ভাবে আমাদের অফিসে :
সরাসরি যোগাযোগ বা মৌলিক তথ্যের জন্য ফোন 01911878274 এ সরাসরি যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়। যদি আপনি আরও যেতে চান তবে পাসপোর্ট সহ আপনার সমস্ত অ্যাকাডেমিক নথির সাথে আমাদের অফিসে যান।
সানরাইজ এডুকেশন কন্সালটেন্টস
ফোন: 01911878২74; 01707272625
ইমেইল: info@sunrise-bd.net
ওয়েবসাইট: www.sunrise-bd.net
No comments:
Post a Comment